জাতীয়

পদ্মা সেতুর উদ্বোধন কালঃ ৪ জেলার উদযাপন ব্যয় ৫ কোটি টাকা।

ঢাকা প্রতিনিধিঃ

আগামীকাল শনিবার প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন। পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান খুবই জমকালো করতে চার জেলার ডিসিদের নামে প্রায় ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। তবে পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্প থেকে এসব জেলার ডিসিকে অর্থছাড় দিতে প্রকল্প পরিচালককে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল শনিবার মাদারীপুরের শিবচরে জনসভায় বক্তব্য দিবেন এ উপলক্ষ্যে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

গত ১৫ জুন সেতু বিভাগ থেকে চার জেলার ডিসিদের নামে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সেতু বিভাগের উপনচিব মো. আবুল হাসান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, পদ্মা সেতু’র উদ্ধোধনী অনুষ্ঠান উদযাপন উপলক্ষ্যে ৩ থেকে ৭ দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনের লক্ষ্যে ঢাকা জেলা প্রশাসক, মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসক, মাদারীপুর জেলা প্রশাসক এবং শরীয়তপুর জেলা প্রশাসকের নিকট থেকে চাহিদা পত্র পাওয়া গেছে। উক্ত চাহিদা পত্রের পরিপ্রেক্ষিতে অনুষ্ঠানের ব্যাপ্তি বিবেচনায় বর্ণিত চার জেলায় বরাদ্দ প্রদান করা হলো। বরাদ্দকৃত জেলা গুলো হচ্ছে, ঢাকা জেলার জন্য ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা, মুন্সিগঞ্জ জেলার জন্য ১ কোটি ৩৯ লাখ টাকা, মাদারীপুর জেলার জন্য ১ কোটি ৩৯ লাখ টাকা এবং শরীয়তপুর জেলার জন্য ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া ৬০ জেলায় উদযাপন ব্যয় কত বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সেতু বিভাগ থেকে সেটি বলা হচ্ছে না।

সম্প্রকি সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকের কেমন হবে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান? এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, ‘আপনারাই বলেন পদ্মা সেতুর উদ্বোধন ¤্রয়িমাণ, নাকি জমকালো হওয়া উচিত?’ জবাবে কোনো কোনো সাংবাদিক বলেন, জমকালো হওয়া উচিত। তখন মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘তাহলে ইনশা আল্লাহ, সুপার গর্জিয়াস (খুবই জমকালো) হবে। পদ্মা সেতুর মূল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পাশাপাশি ৬৪টি জেলাতেও অনুরূপভাবে তা দেখানোর সুযোগ থাকবে।

আনুষ্ঠানিকভাবে গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে ‘পদ্মা সেতু’র নামকরণও করা হয়েছে। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের তারিখ ও সেতুর নামকরণ অনুমোদনের জন্য ২৪ মে সারসংক্ষেপ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ওই দিন তিনি গণভবন থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পদ্মা সেতুর দুটো সামারি (সারসংক্ষেপ) দিয়েছিলাম। একটা পদ্মা সেতু উদ্বোধনের সামারি, যেখানে তিনি শনিবার তারিখ লিখে সই করেছেন। তিনি বলেছেন, পদ্মা সেতুর নাম পদ্মা নদীর নামে হবে। এটি কারও নামে করার দরকার নেই।

শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক মো. পারভেজ হাসান ইনকিলাবকে বলেন, শনিবার পদ্মা সেতু উদ্বোধনকে আরও বর্ণিল করতে এ আয়োজন। উদ্বোধন করবেন শেখ হাসিনা, যিনি পদ্মা সেতুর স্বপদ্রষ্টা ও রূপকার। যার অপার দেশপ্রেম এবং সাহসিকতার কারনে প্রমত্তা পদ্মার বুকে আজ ১৮ কোটি বাঙালীর উন্নয়নের বাতিঘর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই অবদানকে শরীয়তপুরবাসী কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করে বরণ করবে এবং আজীবন লালন করবে। এরই প্রেক্ষিতে আজকে আমরা এখানে পদ্মা সেতু দেয়াল-খেয়ালে এই নামে আমরা পদ্মা সেতুকে নিয়ে আমাদের শিশু শিক্ষার্থীদের নিয়ে এই আয়োজন। যারা মূলত আগামী দিনে পদ্মা সেতু’র সুবিধাভোগী।

শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনদীপ ঘরাইয়ের উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের ভাবনায় পদ্মা সেতু কেমন তা শরীয়তপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশের সীমানা প্রাচীরে ও শরীয়তপুর-ঢাকা মহাসড়কের পাশে উন্মুক্ত দেয়ালে লাগানো হয়েছে শিক্ষার্থীদের আঁকা পদ্মা সেতুর ছবি ও পদ্মা সেতু নিয়ে কবিতা। শানবার জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন হবে। তাই সদর উপজেলার ২১টি বিদ্যালয়ের ৪২ পিলারের স্মরণে পদ্মা সেতু নিয়ে ৪২টি কবিতা ও ৪১ টি স্প্যানের স্মরণে ৪১ জন শিক্ষার্থীর আঁকা সেতুর ছবি ও দেয়ালে লাগানো হয়। আর এর নাম রাখা হয়েছে পদ্মা সেতু দেয়ালে- খেয়ালে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় দেয়াল লিখন ও ছবি প্রদর্শনী পদ্মা সেতু দেয়ালে খেয়ালে উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মো. পারভেজ হাসান।

পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে আগামী শনিবার মাওয়ায় যেতে নির্দিষ্ট রুট ব্যবহারের নির্দেশনা জারি করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। অনুষ্ঠানস্থলে নির্দিষ্ট সময়ে পৌঁছানোর জন্য অতিথিদের পর্যাপ্ত সময় হাতে নিয়ে রওয়ানা হওয়ারও অনুরোধ জানানো হয়েছে।

Related Articles

Back to top button