কক্সবাজারচকোরিয়া

চকরিয়ায় ফের বন্যা, পানি বন্দি দেড় লাখ মানুষ, ভাঙ্গনের কবলে ১ নং মাতামুহুরি বেড়িবাঁধ

মো.সাইফুল ইসলাম খোকন , চকরিয়া.
ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার মাতামুহুরী নদীর পানি ফের বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা সৃষ্টি হয়েছে। গত শনিবার রাত থেকে ভারী বৃষ্টি হওয়ার কারণে মাতামুহুরি নদীর পানি পুনরায়  বিপদসীমা অতিক্রম করে প্রবাহিত হচ্ছে। এরই মধ্যে নদীর একাধিক পয়েন্টে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ ভেঙে গিয়ে লোকালয়ে অনায়াসে ঢুকে পড়ছে ঢলের পানি। এ অবস্থায় উপজেলার অন্তত ১৫০ থেকে ১৬০ গ্রামের  বসতঘর, স্কুল মাদরাসা মসজিদ ও গ্রামীণ সড়ক হাটু থেকে কোমড় সমান পানিতে তলিয়ে গেছে । এতে প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষ গতকাল দুপুর থেকে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
গতকাল দুপুরে  উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান বন্যা কবলিত এলাকায় গুলো পরিদর্শন করে জনগণকে সতর্কসহ যান মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পাশের সাইক্লোন সেন্টার গুলোতে আশ্রয় নেয়ার অনুরোধ করেন।  এছাড়া পাহাড়ের তলদেশে বসবাসরত লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয় যাওয়ার অনুরোধ করছেন।
এদিকে ফের বন্যার কারণে, ধান চাষ সহ বিভিন্ন সবজি ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে।  পানি নেমে গেলে ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে।
মাতামুহুরি নদীর পানি পুনরায় বৃদ্ধি কারণে চকরিয়া পৌরসভার পশ্চিম দিগরপান খালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিনে ১ নং বেড়িবাঁধ চরম ঝুঁকিতে রয়েছে।  গতকাল বিকালে পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী ঝুঁকি পূর্ণ স্থানটি পরিদর্শন করেন এবং স্থানীয় লোকজনদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন। উপজেলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সমিতির সভাপতি ও সুরাজপুর মানিকপুর ইউপি চেয়ারম্যান আজিমুল হক আজিম বলেন, ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ফের  উপজেলার ১৮ ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। সুরাজপুর মানিকপুর ইউনিয়নে কমপক্ষে ১০টি গ্রাম পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়ার কারণে বানবাসি মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে  এবং কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে।
কাকারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সাহাব উদ্দিন বলেন, ভারী বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট পাহাড়ি ঢলে কাকারা ইউনিয়নের ১২টি গ্রামের বসতঘর, স্কুল মাদরাসা মসজিদ ও রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। ভাঙ্গ। স্থান দিয়ে দ্রুত পানি প্রবেশের কারণে কৃষি ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
 হারবাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেহেরাজ উদ্দিন মিরাজ বলেন, অবিরাম ভারী বর্ষণে হারবাং ইউনিয়নের অন্তত ২০টি গ্রামে ফের  পানিতে ভাসছে। বসতঘর ও চুল্লিতে পানি ঢুকে পড়ায় থাকা খাওয়া নিয়ে নিদারুণ দুর্ভোগে আছে জনসাধারণ।
কোনাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দিদারুল হক সিকদার বলেন, গতকাল দুপুরে মাতামুহুরী নদীর ঢলের পানির প্রচন্ড ধাক্কায় কোনাখালী ইউনিয়নের একাধিক পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভাঙ্গন স্থান দিয়ে পানি লোকালয়ে অনায়াসে ঢুকে পড়ছে ঢলের পানি। এতে জনগনের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
ফাসিয়া খালি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন বলেন, ফের বন্যার কারণে সব জায়গায় পানিতে সয়লাব।  হাজিযান,  উত্তর ঘুনিয়া ও দক্ষিণ ঘুনিয়ার মানুষ  পানি বন্দী হয়ে  পড়েছে।  ঝুঁকি পূর্ণ হয়ে পড়েছে মাতামুহুরি নদী লাগোয়া বেঁডিবাঁধ।
একইভাবে অবিরাম ভারী বর্ষণে গতকাল সোমবার সকাল থেকে উপজেলার কৈয়ারবিল, বরইতলী, সাহারবিল, পুর্ববড় ভেওলা, ঢেমুশিয়া, বদরখালী, চিরিঙ্গা, ডুলাহাজারা, বমুবিলছড়ি ও খুটাখালী ইউনিয়ন এবং চকরিয়া পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা হাঁটু থেকে কোমড় সমান পানিতে নিমজ্জিত হয়ে গেছে।

Related Articles

Back to top button